সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১০:১৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

স্বদেশ ডেস্ক:

কুড়িগ্রামে কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। এ সময় ছয়টি বাড়ি ভেঙেছে। হুমকিতে রয়েছে আরো ৭০-৮০টি বাড়ি। অসময়ে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ।

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার ৩টি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে আগ্রাসী তিস্তা নদী। প্রায় ৪০ কিলোমিটারব্যাপী এই নদীটির ভাঙন কবলিত বাম তীরে মাত্র ৫ কিলোমিটার জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকি ৩৫ কিলোমিটার উন্মুক্ত নদীর অনেক জায়গায় চলছে এখন ভাঙন। গত তিন দিনে বৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিঘার পর বিঘা বোরো ধান, ফলদ ও কাঠের গাছসহ ভেঙে যাচ্ছে বিল্ডিং বাড়ি। এখন হুমকিতে রয়েছে প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি পরিবার।

গত কয়েক বছর ধরে তিস্তার ভয়াবহ আগ্রাসনে রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, মন্দির, ডাংরারহাট, রামহরি, পাড়ামৌলা ও গাবুর হালান গ্রামের একাংশ নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছে। মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আরো গ্রামের পর গ্রাম। বসতভিটা ও জমি হারিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে বুক ফাঁটা কান্নায় ভারি হয়ে আসছে এখানকার আকাশ-বাতাস। নদী ভাঙনের হুমকিতে থাকা মানুষ এখন জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম মন্ডলপাড়া গ্রামের মৃত শরাফত মাস্টারের ছেলে মোস্তাক আহমেদ (৫৬) হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘গতবার নদী বাড়িভিটা সউগ (সব) খায়া (খেয়ে) গেইল (ফেলছে)। হালের গরু বিক্রি করি নতুন বাড়ি করনু (করছি)। এবারো ভাঙবের নাগছে (লাগছে)। কামলা দিয়া খাং। এই বাড়ী গেইলে (গেলে) করিম কি। মোর পকেটোত বিষ খাওয়ার মত টেকা নাই।’

ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম এলাকার সাবেক মেম্বার শহিদুল ইসলাম জানান, বর্ষা আসার আগেই হঠাৎ করে ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি, গাছপালাসহ আধাপাকা বোরো ধান ক্ষেত। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, ৮টি মসজিদ ও একটি মাদরাসাসহ শত শত বিঘা আবাদী জমি।

তিনি বলেন, বর্তমানে এই ইউনিয়নে গতিয়াসাম, রামহরি, কালিরহাট ও মেদনীপুর গ্রামে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে সহায়তা চেয়েও পাওয়া যায়নি। তারা বলছে, এই মুহূর্তে তাদের কাছে কোনো বাজেট নেই।

রাজারহাট উপজেলার ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল কুদ্দুছ প্রামাণিক জানান, আমার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড চরম হুমকিতে রয়েছে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে গিয়েছি। তাদের কোনো বাজেট নেই বলে তারা জানিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমাদের ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোকে বাঁচান। না হলে আমরা বিশাল ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, হঠাৎ বৃষ্টির ফলে তিস্তায় অরক্ষিত এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। সমীক্ষা প্রকল্প অনুমোদন করা হলেও এখনো প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানান এই কর্মকর্তা।

সূত্র : ইউএনবি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877